ঢাকা,শনিবার, ৪ মে ২০২৪

পেকুয়ায় চৌকিদার নুরুল ইসলামের খুঁটির জোর নিয়ে এলাকাবাসীর প্রশ্ন!

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া

কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত বিতর্কিত ও বহু অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত এক গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) এর খুঁটির জোর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় নানা ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়লেও বরাবরই বহাল তবিয়তে রয়ে যায় ওই গ্রাম পুলিশ। এনিয়ে ওই গ্রাম পুলিশের খুঁটির জোর নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে স্থানীয়রা। নানা ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত গ্রাম পুলিশের নাম হলো নুরুল ইসলাম আকাশ (৩৫), পিতা-ছাবের আহমদ। তিনি পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের ভারুয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা এবং বারবাকিয়া ইউনিয়নের পরিষদের অধীনে ১নং ওয়ার্ড়ে গ্রাম পুলিশ চৌকিদার হিসেবে কর্মরত রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বারবাকিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড়ের গ্রাম পুলিশ নুরুল ইসলাম আকাশের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বয়স্ক ভাতা, বিধাব ভাতা, ভিজিডি, ভিজিএফর চাল বিতরনের সময় হত দরিদ্র উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা আদায়, থানা পুলিশের খাতায় গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকা আসামীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছে। এসব অপরাধ করেও গ্রাম পুলিশের চাকুরীতে বহাল রয়েছে আকাশ। এসবের পরেও বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম পুলিশ আকাশের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

জানা যায়, ২০২২ ইংরেজীর ১১ এপ্রিল বারবাকিয়া ইউনিনের ভারুয়াখালী গ্রামের কলেজ ছাত্রী কাশপ্রিয়া সোলতানা মুন্নি (১৭) কে অপহরণ করার ঘটনায়ও জড়িত ছিল গ্রাম পুলিশ নুরুল ইসলাম আকাশ। অপহরণের ঘটনায় কলেজ ছাত্রীর মা আলহাজ্ব মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ২০২২ইংরেজীর ২৫এপ্রিল গ্রাম পুলিশ নুরুল ইসলাম আকাশকে ২নং আসামী করে পেকুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। অপহরণ মামলার পর গ্রাম পুলিশ নুরুল ইসলাম আকাশ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে এলাকায় এসে দাপটের সাথে বসবাস করছে এবং নানান ধরণের অপরাধ করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে। গ্রাম পুলিশ আকাশ এখন ভারুয়াখালীর মুর্তিমান আতংক।

এছাড়াও ২০২৩ইংরেজীর ২১মে এক নারীকে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনাল-২-এ চট্টগ্রামে নুরুল ইসলাম আকাশ কে ২নং আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানা ও প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে আরো একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গ্রাম পুলিশ নুরুল ইসলাম আকাশ আইনের লোক হয়েও বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সাথে জঁড়িত থাকায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গ্রাম পুলিশের চাকুরীর আড়ালে অপরাধ কর্মকান্ড সংগঠিত করে চরমভাবে বেপরায়া হয়ে উঠেছে।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের সুত্রে জানা গেছে, বারাবকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ড়ের গ্রাম পুলিশ নুরুল ইসলাম আকাশের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা ইউএনও বরাবরে অভিযোগ দায়ের করলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে ই্উএনও অফিস থেকে বেশ কয়েকবার নির্দেশনা দেওয়া হলেও রহস্যজনক কারণে অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে কোন ধরনের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদ।

এ ব্যাপারে বারাবকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আরিফুল বাহার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, গত কয়েক মাস পূর্বে বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদে যোদান করেছেন। তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেননা। তবে ইউএনও অফিস থেকে গ্রাম পুলিশদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ইউএনও অফিস চাইলে গ্রাম পুলিশ নুরুল ইসলাম আকাশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ড়ের গ্রাম পুলিশ নুরুল ইসলাম আকাশের সাথে যোগাযোগ করে তার বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। সংবাদের তার বক্তব্য সংযোজন করা সম্ভব হয়নি। পরে তার যৌক্তিক বক্তব্য পাওয়া গেলে গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করা হবে।

 

পাঠকের মতামত: